যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনের জন্য বিচার শুরু করতে প্রতিনিধি পরিষদ থেকে সিনেটে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। সদ্য সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সিনেটের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ হিসাবে এটি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সিনেটে অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনের হামলার ঘটনায় উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে।
কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলাকালে ট্রাম্প সমর্থকরা হামলা চালায়। নজিরবিহীন ওই হামলায় এক পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন নিহত হয়। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিনিধি পরিষদের নয় ডেমোক্র্যাট সদস্য ট্রাম্পের এই অভিশংসন প্রক্রিয়ায় প্রসিকিউটরের ভূমিকায় থাকছেন। সোমবার ওই প্রসিকিউটররা অভিশংসনের বিচার শুরুর জন্য আনুষ্ঠানিক অভিযোগ কংগ্রেসের কাছে হস্তান্তর করেন। প্রধান প্রসিকিউটর জেমি রাসকিন কংগ্রেসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় দফা অভিশংসন বিচারে সিনেট সদস্যদের এমন শপথ নজিরবিহীন ঘটনা। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিশংসন বিচারের ঘটনাও যুক্তরাষ্ট্রে আগে কখনো ঘটেনি।
২৬ জানুয়ারি মার্কিন সিনেটের পাঁচজন ছাড়া বাকি রিপাবলিকান সদস্যরা ট্রাম্পের অভিশংসন বিচার কার্যক্রমের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন। অর্থাৎ মাত্র পাঁচজন রিপাবলিকান সিনেটর ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে অবস্থান নেন।
ট্রাম্পের অভিশংসন দণ্ড কার্যকর করতে কমপক্ষে ১৭ জন রিপাবলিকান সিনেটরের সমর্থন প্রয়োজন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমন সমর্থন পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। এ কারণে ট্রাম্পের অভিশংসন দণ্ড কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে শুরুতেই সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। শুরুতেই অভিশংসন প্রস্তাব ভোটের কবলে পড়ায় তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টসহ একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, অভিশংসন প্রস্তাব থেকে ট্রাম্পের খালাস পাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
ট্রাম্পকে দণ্ড দেওয়ার জন্য প্রয়োজন সিনেটের দুই–তৃতীয়াংশের সমর্থন। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে রিপাবলিকান সিনেটরদের ৫ ভোট যোগ করলে মোট ভোট হয় ৫৫। পদাধিকারবলে ভাইস প্রেসিডেন্টের এক ভোট যুক্ত করলেও অভিশংসন দণ্ড কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় ৬৭ ভোট সিনেটে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অভিশংসন আদালতের কাজ শুরু হবে বলে একমত হয়েছেন সিনেটের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা।