দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চলছে রাশিয়ার। এখনও যুদ্ধের তীব্রতা এবং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে মস্কোর উত্তেজনা কোনোটিই কমেনি। এরমধ্যেই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। পারমাণবিক যুদ্ধের ‘গুরুতর’ ঝুঁকিকে অবমূল্যায়ন না করার জন্য বিশ্বকে সতর্ক করে রাশিয়া বলেছে, তারা এই ঝুঁকি হ্রাস করতে চায়। পাশাপাশি ইউক্রেইনে পশ্চিমের পাঠানো প্রচলিত অস্ত্রের চালান তারা বৈধ লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করবে বলেও হুঁশিয়ারি জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (২৫ এপ্রিল) প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
তিনি বলেন, ইউক্রেনে একাধিকবার অস্ত্র সম্ভার ধ্বংস করেছে রাশিয়া। তারপরেও সেখানে অস্ত্র যাচ্ছে কী করে? এর থেকেই স্পষ্ট, ন্যাটো তাদের অস্ত্রের জোগান অব্যাহত রেখেছে। ইউক্রেনকে অস্ত্রসাহায্য করে ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে প্রক্সি যুদ্ধে নেমেছে। এই অস্ত্রের সাহায্যেই রাশিয়ার সেনার উপর আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেন।
লাভরভ জানিয়েছেন, বাইরে থেকে পরমাণু লড়াইয়ের একটি আবহ তৈরির চেষ্টা চলছে। রাশিয়া তার মধ্যে ঢুকতে চায় না। একটি চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধ শেষ হতে পারে। দুই দেশ শান্তি আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। তবে চুক্তি সইয়ের সময় দেখতে হবে, কোন দেশের সেনা কোথায় অবস্থানরত।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ আরও বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে এক অর্থে যুদ্ধে লিপ্ত। তারা (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে। যুদ্ধ মানে যুদ্ধই।’
ল্যাভরভের এ সাক্ষাৎকার প্রচার হওয়ার পর টুইটারে ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা লিখেছেন, “ইউক্রেইনকে সমর্থন করা থেকে ভয় দেখিয়ে বিশ্বকে থামানোর শেষ আশাও হারিয়েছে রাশিয়া। এর একটাই মানে, রাশিয়া পরাজয় অনুভব করছে।”
রোববার কিইভে এক সফরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইউক্রেইনকে আরও সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউক্রেইনের কাছে ১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের গোলাবারুদের সম্ভাব্য বিক্রি অনুমোদন করতে একটি জরুরি ঘোষণা ব্যবহার করেছে। অস্ত্রের এই চালানে হাউইটজার কামান, ট্যাঙ্ক ও গ্রেনেড লঞ্চারের গোলা থাকতে পারে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
ওয়াশিংটনে নিযুক্ত মস্কোর রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্রকে অস্ত্রের এ চালান বন্ধ করতে বলেছেন; পশ্চিমা অস্ত্র সংঘাত আরও বাড়িয়ে তুলছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
ইউক্রেইনে দুই মাস ধরে চলা রাশিয়ার আক্রমণে কয়েক হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে, শহর ও নগরগুলো ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং ৫০ লাখেরও বেশি লোককে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে। এটি ১৯৪৫ সালের পর থেকে ইউরোপের কোনো দেশে হওয়া সবচেয়ে বড় আক্রমণ।
রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেইনকে নিরস্ত্রীকরণ ও নব্যনাৎসী মুক্ত করতে প্রতিবেশী দেশটিতে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে তারা।
https://slotbet.online/