- Channel52inc - https://channel52us.com -

রিয়ালের প্রত্যাবর্তন

শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে তিনে থাকা সেভিয়ার ম্যাচে ২৫ মিনিটে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়া রিয়াল দ্বিতীয়ার্ধে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখল! যোগ করা সময়ের গোলে ৩-২ ব্যবধানে জিতেই গেল মাদ্রিদের কুলীন ক্লাবটি।

ইভান রাকিতিচের নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এরিক লামেলা। অসাধারণ এক জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে সেভিয়া। সেই সঙ্গে শিরোপা লড়াই জমে ওঠার আভাসও মেলে। তবে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই পাল্টে যায় চিত্র। রদ্রিগো ব্যবধান কমানোর পর সমতা টানেন নাচো ফের্নান্দেস। আর শেষ সময়ে বেনজেমার ওই জয়সূচক গোল।

দারুণ এই জয়ে লিগ টেবিলে ১৫ পয়েন্টে এগিয়ে গেল রিয়াল।

গত নভেম্বরে নিজেদের মাঠে সেভিয়ার বিপক্ষে শুরুতে গোল হজমের পর ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতেছিল রিয়াল। তাদের ২-১ ব্যবধানের জয়ে গোল দুটি করেছিলেন বেনজেমা ও ভিনিসিউস। এবারও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল করলেন ফরাসি স্ট্রাইকার।

পাঁচ দিন আগে ঘরের মাঠে চেলসির বিপক্ষে অনেকটা সময় কোণঠাসা হয়ে থাকা রিয়াল এদিনও শুরু থেকে যেন নিজেদের খুঁজে ফিরল। প্রতিপক্ষের ছন্দহীনতার সুযোগটা দু-হাতে লুফে নিল সেভিয়া। ঘড়ির কাটায় ২৫ মিনিট হতেই তারা এগিয়ে গেল ২-০ গোল।

রিয়ালের জালে বল ঢুকতে পারত নবম মিনিটেই। ডি-বক্সে বল পেয়েই প্রতিপক্ষের দুই জনের মধ্যে দিয়ে শট নেন অঁতনি মার্শিয়াল। অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় সেটা।

নিজেদের বক্সের বাইরে লুকা মদ্রিচ প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডার পাপু গোমেসকে ফাউল করলে বাজে ফ্রি কিকের বাঁশি। তা থেকেই দারুণ শটে রক্ষণ দেয়াল গলে ঠিকানা খুঁজে নেন রাকিতিচ।

শটটি নেওয়ার সময় ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও লাফিয়ে উঠে একটু সরে গিয়েছিলেন, ওই জায়গা দিয়েই লক্ষ্যভেদ করেন রাকিতিচ। ওভাবে বল আসবে, ভাবতেও পারেননি থিবো কোর্তোয়া, জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখেন বলের জালে জড়ানো। গোলটির পর মিলিতাও ও লুকা মদ্রিচকে তর্ক করতেও দেখা যায়।

গড়মিলে হওয়া ওই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই দ্বিতীয়বার রিয়ালের জালে বল জড়ায়। এখানেও মিলিতাওয়ের দুর্বলতা ফুটে ওঠে। সতীর্থের হেডে বাড়ানো থ্রু পাস ধরে সহজেই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন হেসুস করোনা। তাকে বাধা দিতে এগিয়ে যান কোর্তোয়া, কিন্তু তার আগেই পেনাল্টি স্পটের কাছে বল বাড়ান করোনা। প্লেসিং শটে গোলটি করেন লামেলা।

বিরতির আগে ব্যবধান কমানোর একটা হাফ-চান্স পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি বেনজেমা। তার কোনাকুনি শট যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে এ পর্যন্ত নিজেদের সেরা সুযোগটি পায় রিয়াল। কিন্তু মদ্রিচের পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়েও গোলরক্ষকের বাধা এড়াতে পারেননি বেনজেমা। তার শট ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো।

রিয়ালের গোলের অপেক্ষা যদিও দীর্ঘ হয়নি। পাসিং ফুটবলে গড়া আক্রমণে ৫০তম মিনিটে দানি কারভাহালের পাস ছয় গজ বক্সের বাইরে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় জালে পাঠান এই অর্ধের শুরুতে কামাভিঙ্গার বদলি নামা রদ্রিগো।

গত বুধবার চেলসির বিপক্ষে ৩-০ গোলে পিছিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়া দলকে বদলি নেমেই পথ দেখিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড।

গোল পেয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে রিয়াল। প্রথমার্ধের বিবর্ণতা ঝেড়ে ফেলে করতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। ৫৩তম মিনিটে মিলিতাওয়ে অনেক দূর থেকে নেওয়া বুলেট গতির শট কোনোমতে পাঞ্চ করে ক্রসবারের ওপর দিয়ে বল পাঠান গোলরক্ষক। ৬৩তম মিনিটে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা রদ্রিগো দারুণ নৈপুণ্যে একজনকে কাটিয়ে ব্যাকহিলে পাস দেন বেনজেমাকে। ফরাসি ফরোয়ার্ডের কোনাকুনি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।