পেনসিলভানিয়া, যুক্তরাষ্ট্র | ১৮ জুন
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট শহর মিলবোর্নে ভোট জালিয়াতির ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন দুই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রাক্তন কাউন্সিল সদস্য-মোঃ নূরুল হাসান ও মোঃ রফিকুল ইসলাম। ফেডারেল আদালত নূরুল হাসানকে ৩৬ মাস এবং রফিকুল ইসলামকে ১ বছর ১ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন। উভয়কে ১৫ আগস্টের মধ্যে কারাগারে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মিলবোর্ন শহরের ২০২১ সালের বরো মেয়র নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের ইস্টার্ন ডিসট্রিক্ট কোর্ট এ রায় দেন। ইউএস অ্যাটর্নি অফিস ১৮ জুন এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এ তথ্য প্রকাশ করে।
জালিয়াতির কৌশল ও বিচারকের মন্তব্য
আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র অনুযায়ী, অভিযুক্তরা একটি সুপরিকল্পিত জালিয়াতির ছক তৈরি করেছিলেন। এর আওতায় ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে ভুয়া ভোটার নিবন্ধন, মেইল-ইন ব্যালট সংগ্রহ ও নিজেরা পূরণ করে নিজেদের পক্ষে ব্যালট জমা দেন তারা। এই কর্মকাণ্ডে তৃতীয় একজন অভিযুক্ত ছিলেন—মোঃ মনসুর আলী, যিনি মিলবোর্ন কাউন্সিলের আরেক সদস্য। তার সাজা ঘোষণা হবে আগামী সপ্তাহে।
বিচারক এই অপরাধকে গণতন্ত্রের প্রতি ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “ভোট জালিয়াতি শুধু নির্বাচনের নিয়ম ভঙ্গই নয়, এটি জনগণের আস্থার অপমান।”
নির্বাচনী প্রতিযোগিতা ও কারচুপির পরিণতি
২০২১ সালের বরো মেয়র নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে বিজয়ী হন মাহাবুবুল তাইয়ব। তবে পরবর্তীতে মেইল-ইন ব্যালট কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা হয়। তদন্তে এসব অনিয়মের প্রমাণ মেলায় বিচার শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত আসে এই দণ্ডাদেশ।
কমিউনিটিতে প্রতিক্রিয়া ও আত্মসমালোচনার জায়গা
প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য এ ঘটনা নিঃসন্দেহে এক বেদনাদায়ক অধ্যায়। স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশিদের মধ্যে অনেকেই সম্মান ও আস্থার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন-কিন্তু এই রায়ের ফলে গোটা কমিউনিটির ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
নেতৃত্বের অর্থ কেবল জনপ্রিয়তা নয়, বরং দায়িত্ব ও নৈতিকতা। গণতন্ত্রের সুফল পেতে হলে তাকে সম্মান জানাতে হয়, অপব্যবহার নয়। মিলবোর্নের এই ঘটনা আমাদের সকলের জন্য একটি সতর্ক বার্তা-বিশ্বাসের অপব্যবহার কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।