চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে লাশবাহী স্পিডবোট চালু হচ্ছে—নিজের ফেসবুক আইডিতে এমন খবর পোস্ট করে স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন প্রবাসী মোহাম্মদ আমীন। গতকাল শনিবার মোহাম্মদ আমীনের লাশ বহনের মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে সন্দ্বীপের সেই লাশবাহী স্পিডবোটের।
৮ অক্টোবর ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় মোহাম্মদ আমীনসহ সন্দ্বীপের সাত প্রবাসী প্রাণ হারান। অন্যরা আমীনের অধীনে সেখানে কাজ করতেন। গতকাল রাতে নিহত সাত প্রবাসীর লাশ সন্দ্বীপে পৌঁছায়। আজ রোববার সকালে জানাজা শেষে তাঁদের নিজ নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
প্রবাসী মোহাম্মদ আমীন সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আলী কব্বরের ছেলে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মাত্র এক দিন আগে সন্দ্বীপে লাশবাহী স্পিডবোট চালুর বিষয়ে ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি। ঘরে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে তাঁর। এর মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয়েছিল। আলী কব্বর জানান, কিছুদিন পর দেশে এসে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করার কথা ছিল আমীনের।
দুর্ঘটনায় নিহত অন্য ব্যক্তিরা হলেন মো. সাহাবুদ্দিন (২৮), মো. বাবলু (২৮), মো. রকি (২৭), মো. আরজু (২৬), মো. জুয়েল (২৮) ও মোশারফ হোসেন (২৬)। ওই সাত ওমানপ্রবাসী সাগরে মাছ শিকারের কাজ করতেন। স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, ৮ অক্টোবর ওমানের ধুকুম প্রদেশের সিদরা এলাকায় ওই সাত প্রবাসীকে বহনকারী গাড়ির সঙ্গে অন্য একটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তাঁরা প্রাণ হারান।
দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া মো. সাহাবুদ্দিনের পরিবারে মা–বাবা, স্ত্রী ও চার মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে বিদেশ যাওয়া নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে প্রায়ই গল্প করতেন তিনি। মাঝেমধ্যে ফেসবুকেও পরিবারকে নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা লিখতেন। মারা যাওয়ার কয়েক দিন আগে তিনি লেখেন, ‘মধ্যবিত্ত মানে হাজারটা স্বপ্ন, কিন্তু দিন শেষে ভাগ্যের খাতাটা শূন্য।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া সাত প্রবাসীর মধ্যে ছয়জনই অসচ্ছল। ভাঙা টিনের বাড়িই তাঁদের সম্বল। এর মধ্যে পাঁচজনেরই চার থেকে ছয় মাস বয়সী সন্তান রয়েছে।