২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ১০:২২, রবিবার

  • বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
শবে কদরের ইবাদত ও করণীয়
রিপোর্টারের নাম / ২৯৬ বার
আপডেট সময় রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

তথাপিও ২৬ রমজান দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৭ রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ রাতে আগে কিংবা পরে শবে কদর হলেও বিশ্বব্যাপী এ রাতকে শবে কদর মনে করে ইবাদতে মশগুল হয় মুমিন মুসলমান। তাদের জন্য আজকের ইবাদত ও করণীয়-

২৬ রমজান আজ। সন্ধ্যা থেকেই শুরু হবে বহুল আকাঙ্ক্ষাতি বিশ্বব্যাপী বহুল পরিচিত রাত লাইলাতুল কদর। যদিও বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ কর ‘

>> সালাতুত তাসবিহ আদায় করা
সালাতুত তাসবিহ আদায় করা। এ নামাজের অনেক সাওয়াব। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (আমার পিতা) হজরত আব্বাসকে বললেন, ‘হে আব্বাস! হে চাচাজান! আমি কি আপনাকে দেব না? আমি কি আপনাকে দান করব না? আমি কি আপনাকে সংবাদ দেব না? আমি কি আপনার সঙ্গে ১০টি সৎকাজ করব না? (অর্থাৎ ১০টি উত্তম তাসবিহ শিক্ষা দেব না) যখন আপনি তা (আমল) করবেন-
>> তখন আল্লাহ আপনার আগের, পরের, পুরাতন, নতুন, সবধরনের গোনাহ মাফ করে দেবেন।
>> ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত গোনাহ মাফ করে দেবেন।
>> সগিরা ও কবিরা গোনাহ মাফ করে দেবেন।
>> গোপন ও প্রকাশ্য গোনাহ মাফ করে দেবেন।
(অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে চাচা!) এভাবে যদি প্রতিদিন একবার এ নামাজ পড়তে সক্ষম হন; তবে তা পড়বেন। আর যদি সক্ষম না হন, তবে প্রত্যেক জুমআর দিনে একবার পড়বনে।
তাও যদি না পারেন, তবে প্রত্যেক মাসে একবার পড়বেন। তাও যদি না পারেন তবে প্রত্যেক বছর একবার পড়বেন, আর যদি তাও না পারেন তবে আপনার জীবনে অন্তত একবার পড়বেন। (তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত)
সুতরাং কোনো বান্দা যদি শবে কদর পায়, আর সে রাতে সালাতুত তাসবিহ আদায় করে তবে তার জন্য হাজার মাস ইবাদতের সাওয়াব লাভে ধন্য হবে।

>> বেশি বেশি গোনাহ মাফ চাওয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে এ রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার নসিহত করেছেন। শবে কদরের রাতে এ দোয়া বেশি বেশি পড়ার কথা বলেছেন-
اَللَّهُمَّ اِنَّكَ عَفُوُّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُوْ عَنَّا
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ`ফুওয়ুন; তুহিব্বুল আ`ফওয়া; ফা`ফু আন্না।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালো বাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

>> কাযা নামাজ আদায় করা
মানুষের জীবনে কারণে অকারণে অসংখ্য ওয়াক্ত নামাজ ছুটে যায়। তাদের জন্য নামাজ কাযার সূবর্ণ সময় পবিত্র লাইলাতুল কদর।’ কারণ আল্লাহ তাআলার ঘোষণা, লাইলাতুল কদর হাজার মাসে চেয়ে উত্তম।

এ রাতে যদি কেউ এক ওয়াক্ত নামাজ কাযা আদায় করে তবে আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী হাজার ওই ওয়াক্তের নামাজের কাযা আদায় হওয়ার কথা। আর এমনটি আশা করে কাযা আদায় করা মুসলিম উম্মাহর জন্য জরুরি।

সুতরাং এ রাতে ন্যূনতম পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ একবার করে কাযা আদায় করা উচিত। আল্লাহ ইচ্ছা করলে এ ওসিলায় বিগত জীবনে ছুটে যাওয়া নামাজগুলোর কাযা আদায়কে কবুল করে ওই বান্দাকে মাফ করে দিতে পারেন।

>> কল্যাণের আবেদন
লাইলাতুল কদর যেহেতু হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম রাত। তাই বান্দার জন্য এ রাতের হক বা অধিকার হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের পাশাপাশি মানুষের দুনিয়ার জীবনে সুখ-শান্তির আবেদন-নিবেদন আল্লাহর দরবারে পেশ করা। যাতে এ রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য সর্বোত্তম ভাগ্য নির্ধারণ করেন। দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ দান করেন।

>> লাইলাতুল কদর সন্ধান করা
পবিত্র লাইলাতুল কদরের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রাতকে নির্ধারণ করা না হলেও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রমজানের শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাতে ‘লাইলাতুল কদর’ তালাশ কর। আর আজ যেহেতু বেজোড় রাত। সে হিসেবে অনেকে আলেম ও বুজুর্গ ব্যক্তি এ রাতকে লাইলাতুল কদর হওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। তাই আজকের রাতে লাইলাতুল কদর লাভে বেশি বেশি ইবাদত করা আবশ্যক।

>> কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণে ইবাদত করা
মুসলিম উম্মাহর জীবন পরিচালনা গাইড ও সংবিধান পবিত্র কুরআনুল কারিম আজকের রাতেই নাজিল হয়েছে। আর তা ছিল ২৬ রমজান দিবাগত রাত তথা ২৭তম রাত। এ কারণে লাইলাতুল কদরের মর্যাদা এত বেশি।

এ রাতে কুরআন নাজিলের সম্মানার্থে আল্লাহ ঘোষণা দিলেন- ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সুতরাং কুরআন নাজিলের রাতে কুরআনকে বাস্তবজীবনে বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার গ্রহণের পাশাপাশি বিশ্বনবির সুন্নতের পরিপূর্ণ অনুসরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করাই হবে লাইলাতুল কদরের সেরা প্রাপ্তি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজ, জিকির-আজকার, কুরআন তেলাওয়াত, হাদিস অধ্যয়ন, দান-খয়রাত, মা-বাবার খেদমতসহ ভালো কাজের মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদর আতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
https://slotbet.online/