১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৩:২১, রবিবার

  • বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ট্রান্সফ্যাটের বিপদ: ঝুঁকি মোকাবেলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিন
Reporter Name / ৬২৪ Time View
Update : রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

হৃদরোগের অন্যতম কারণ হিসেবে ‘ট্রান্সফ্যাট বা ট্রান্স-ফ্যাটি এসিড’কে (টিএফএ) দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

২২ মে জেনেভায় ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ‘রিপোর্ট অন গ্লোবাল ট্রান্সফ্যাট অ্যালিমিনেশন ২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটযুক্ত (অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড) খাবার গ্রহণ করায় প্রতিবছর দেশে অন্তত আট হাজার অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ২১ জনের মৃত্যু হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ট্রান্সফ্যাট বা ট্রান্স-ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) হল প্রাকৃতিক বা শিল্প উৎস থেকে আসা অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। এরই মধ্যে ৬টি দেশ খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিষিদ্ধ করেছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরও ২৫টি দেশ একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা পরবর্তী দু’বছরে কার্যকর হবে।

উদ্বেগের বিষয় হল, ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণের পথে বাংলাদেশ এখনও যাত্রাই শুরু করেনি। ঝুঁকি মোকাবেলায় জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি এ ব্যাপারে বিএসটিআই ও বিএফএসএ’র দ্রুত পদক্ষেপ কাম্য।

বিশ্বব্যাপী ৭৮ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে অসংক্রামক রোগে, যার বেশির ভাগই নিু ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের দেশেও মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ হৃদরোগ ও স্ট্রোক। প্রতিবছর হৃদরোগে ২ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়, যা দেশের মোট মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশ।

বাংলাদেশের মানুষ গড়ে কী পরিমাণ ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ করছে, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। সম্প্রতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ‘কড়া করে ভাজা খাদ্যসামগ্রী’তে টিএফএ’র পরিমাণ নির্ণয় করতে একটি গবেষণা শুরু করেছে।

সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সাধারণত সিঙ্গারা, সমুচা, পুরি, জিলাপি, বিস্কুট, চানাচুর, চিপস ইত্যাদি থাকে, যা হাইড্রোজেনেটেড তেল অর্থাৎ পাম অয়েল কিংবা সয়াবিন তেল দিয়ে কড়া করে ভাজা হয়।

সবচেয়ে বিপজ্জনক হল, রান্নার কাজে একই তেল বারবার ব্যবহার করা। ফলে ট্রান্সফ্যাট উৎপাদিত হয় এবং এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।

ট্রান্সফ্যাটের ঝুঁকি মোকাবেলার একটি পদক্ষেপ হতে পারে প্রক্রিয়াজাত ও শিল্প খাতে উৎপাদিত খাবারে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নির্দিষ্ট করে দেয়া।

ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া ২০০৯ সালে আংশিকভাবে হাইড্রোজেনেটেড তেলে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছিল। পরে ২০১৫ সালে এটি কমিয়ে ৫ শতাংশে নিয়ে আসা হয়।

জানা গেছে, পরবর্তী ধাপে তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রা ২ শতাংশ পূরণ করবে। আমাদের দেশেও ট্রান্সফ্যাটের ঝুঁকি কমাতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে তা জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে, এটাই প্রত্যাশা।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Popular Post
Last Update